বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মাদ (সাঃ) বই রিভিউ – মাসুদ শরীফ
বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মাদ (সাঃ) – মাসুদ শরীফ
বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মাদ (সাঃ)’ হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) – এর অন্যান্য জীবনীগ্রন্থের মতো না। বইটিতে নবীজি (সাঃ)- কে শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্ত বয়স পর্যন্ত দেখানো হয়েছে খুবই সাবলীলভাবে। সেই সাথে আমরা নবীজি মুহাম্মদ( সাঃ) – এর শিশু বয়স থেকে শুরু করে মৃত্যু অবধি প্রতিটি পর্যায় থেকে শিক্ষা নিয়ে কিভাবে নিজেদের সমৃদ্ধ করতে পারি তা সুন্দরভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে বইটিতে।
শিরোনামঃ বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মাদ (সাঃ) বই পরিচয়
বই | বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মাদ (সাঃ) |
লেখক | ড. হিশাম আল – আওয়াদি |
অনুবাদক | মাসুদ শরীফ |
মোট পৃষ্ঠা | ১৩৮ |
প্রকাশনী | গার্ডিয়ান পাবলিকেশন |
প্রথম প্রকাশ | ৩০ নভেম্বর, ২০১৭ |
হার্ডকাভার মূল্য | ২৫০ টাকা |
পেপারব্যাক মূল্য | ২২০ টাকা |
রিভিউ লেখিকা | সেতারা কবির সেতু |
🔷🔷 ড. হিশাম আল লেখক পরিচিতি
ড. হিশাম আল – আওয়াদির জন্ম কুয়েতে। পড়াশোনা করেছেন ইতিহাস, রাজনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ বিষয়ে। অধ্যায়নের সময়টা কাটিয়েছেন ক্যামব্রিজ, এক্সোটারসহ আরো কয়েকটি ব্রিটিশ ইউনিভার্সিটিতে। পিএইচডি ডিগ্রিধারী এই গবেষক একসময় অধ্যাপনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে। ড. হিশামের আগ্রহের বিষয় মানুষকে অনুপ্রাণিত করা, উদ্দীপ্ত করা। নিজে শেখা, অন্যকে শেখানো।
🔷🔷 অনুবাদক মাসুদ শরীফ পরিচিতিঃ
অনুবাদক মাসুদ শরীফ পড়াশোনা করেছেন ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে। পড়াশোনা শেষ করে এখন পুরোদস্তুর পাঠক, লেখক এবং অনুবাদক হিসেবে কাজ করছেন। মাসুদ শরীফের অনুবাদ ভালো লেগেছে। সাবলীলভাবে অনুবাদ করেছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ পিতামহ উপন্যাস বই রিভিউ সাব্বির জাদিদ
📖📖 বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মাদ (সাঃ) : পাঠ মূল্যায়ন
নবীজি ( সাঃ) – এর জীবনীকে অনেকগুলো ছোট, ছোট অধ্যায়ে ভাগ করা হয়েছে এই বইটিতে। মুহাম্মাদ (সাঃ) -এর শিশুকাল, পরিবার, চারপাশ, কৈশোর, তরুণ বয়স, নবুয়্যত প্রাপ্তি অর্থাৎ হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) -এর সমগ্র জীবনকেই এখানে দেখানো হয়েছে। নবীজী (সাঃ)
– এর জীবনের প্রতিটি পর্যায় থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা কিভাবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারি সেই বিষয়েই এই বইটিতে আলোচনা করা হয়েছে। আমরা সাধারণত নবীজী (সাঃ) -এর শৈশব এবং বাল্যকাল সেভাবে পড়ি না। যার কারনে আমরা অনেকেই আমাদের শিশুদের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে নবীজী ( সাঃ) – এর শৈশবের উদাহরণ কম দিয়ে থাকি।
কিন্তু পাঠকরা যখন এই বইটি পাঠ করবে তখন সহজেই জানতে পারবেন শিশু হিসেবে নবীজি (সাঃ) কেমন ছিলেন, বালক হিসেবে কেমন ছিলেন, তরুণ হিসেবে কেমন ছিলেন। সেই সাথে নবীজি (সাঃ)- এর জীবনের বিভিন্ন পর্যায় থেকে শিক্ষা নিয়ে একজন পাঠক নিজেকে ও পরিবারের অন্য সদস্যদের এমনকি সমাজের আত্নন্নোয়নে সহায়তা করতে পারেন।
বালক হিসেবে রাসূল (সা.) ছিলেন অসাধারণ। হাদিস থেকে দেখা যায়, তাঁর দাদা ছোটবেলাতেই এটা খেয়াল করেছিলেন। বলেছিলেন এই ছেলে বড় হলে বিশেষ কিছু হবে। প্রায় একই রকমের ভবিষ্যদ্বাণী আরও একজন করেছিলেন। ১২ বছর বয়সে কিশোর মুহাম্মদ (সা.) যখন সিরিয়া সফরে যান,তখন এক সন্ন্যাসী এ রকমটা বলেছিলেন।
বালক মুহাম্মদ (সা.) যখন দাদার ঘরে লালিত হচ্ছেন, তখন দাদার বয়স আশির কোঠায়। খুব ভালোবাসতেন নাতিকে। তবে এই নাতি যে একসময় নবি হবেন এমন কথা তারা হয়তো কোনদিন ভাবেননি। তাঁর মাও কি কখনো এমন স্বপ্ন দেখেছিলেন? বড় হয়ে বিশেষ কিছু অথবা কেউ হবেন এ পর্যন্তই হয়তো।
তাঁকে নিয়ে তাদের উচ্ছ্বাস তাঁর কানেও পৌঁছাত। বার বার পৌঁছাত। তাঁকে নিয়ে তাদের ভাবনা তিনি হৃদয় দিয়ে অনুভব করতেন। যে বাচ্চা সব সময় বাবা-মায়ের মুখে শোনে সে ভদ্র,স্মার্ট, বড় হয়ে ভালো কিছু হবে -সেই বাচ্চাকে দেখবেন; আর যে বাচ্চা প্রতিনিয়ত বাবা -মায়ের গালি আর বকা খায়,সে বাচ্চাকে দেখবেন। দুই বাচ্চার বেড়ে ওঠাতে বিস্তর পার্থক্য খুঁজে পাবেন।
আরও পড়ুনঃ অন্তিম উপন্যাস লতিফুল ইসলাম শিবলী
বাবা মায়ের কাছ থেকেই কিন্তু শিশুরা নিজেদের ব্যাপারে জানতে শেখে। কারণ বাবা – মা তাকে সবচেয়ে ভালোভাবে চিনে। কাজেই তাদের কথা সে মনে প্রাণে বিশ্বাস করে। সেখান থেকেই তার মধ্যে আত্নমর্যাদা গড়ে ওঠে।
তারা যা বলেন, সেই কথাগুলো তার কানে বাজতে থাকে। কাজেই শিশুদের নিয়ে যাই বলবেন, ভেবেচিন্তে বলবেন!
★★★ বাচ্চাদের আত্নবিশ্বাস কীভাবে বাড়াবেন
★ প্রতিটি শিশুর মধ্যেই প্রতিভা আছে। আপনার নিজের বাচ্চাটাও প্রতিভাবান। আপনি তার প্রতিভা আবিষ্কারে সাহায্য করুন। তার প্রতিভা বিকাশে সহায়তা করুন।সে যদি দেখে আপনি তার পাশে আছেন,তাকে সাহস যোগাচ্ছেন,তাহলে সেও নিজের সামর্থ্য নিয়ে বিশ্বাস করতে শিখবে।
★ বলার সময় কী কী শব্দ ব্যবহার করছেন, তা নিয়ে সতর্ক থাকবেন। বিশেষ করে ও কী করবে, না করবে এ জিনিসগুলো বুঝিয়ে বলার সময় বেশি সতর্ক থাকা প্রয়োজন। গঠনমূলক ও ইতিবাচকভাবে ওদের ভুলগুলো ধরিয়ে দেওয়া উচিৎ। আমি কি চাচ্ছি সেটা তাকে বলা উচিৎ। যেমন-‘চিৎকার করো না তো’ এভাবে না বলে বলতে পারি ‘ আস্তে কথা বলো বাবা’।
★ বাচ্চার নেতিবাচক অভ্যাস বদলানোর জন্য আঘাত না -করে সহায়ক উপায় অবলম্বনের চেষ্টা করুন। যেমন-‘ এত আলসেমি করো না’ এভাবে না বলে সে যেন মজাদার বা প্রোডাক্টিভ উপায়ে সময় কাটাতে পারে সেই চেষ্টা করতে হবে।
আট বছর বয়স পর্যন্ত বালক মুহাম্মদ (সা.) তাঁর দাদার সাথে ছিলেন। এরপর চলে যান তাঁর চাচার বাড়িতে। বিয়ে করার আগ পর্যন্ত ওখানেই ছিলেন।নবি মুহাম্মদ (সা.)- এর শৈশবের জীবনের শিক্ষাকে আমাদের বর্তমান জীবনে কাজে লাগিয়ে শিশু সন্তান প্রতিপালনে আমরা নিজেরা স্মার্ট হতে পারি।
সবশেষে বলতে পারি, একজন পাঠক হিসেবে আমার উপলব্ধি হচ্ছে সকল শ্রেণির মানুষের জন্য এই বইটি অবশ্যই পাঠ্য। বইটিতে রাসূল ( সাঃ) -এর নবী হওয়ার আগের জীবনকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা এই বইটিতে দেখেছি শিশুকাল থেকে কিভাবে তিনি নিজের ব্যক্তিত্ব গড়ে তুলেছেন। টিনএজ বয়সের চ্যালেঞ্জগুলো কিভাবে মোকাবিলা করেছেন। তরুণ বয়সে কিভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। রাসূল ( সাঃ) – এর জীবনের প্রতিটি অধ্যায় থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা কিভাবে নিজেদের জীবন গড়ে তুলতে পারি, বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মদ বইটি মূলত সেই বিষয়টিই তুলে ধরেছে।
বইটি ডাউনলোড করুনঃ বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মাদ (সাঃ) পিডিএফ। বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মদ সাঃ pdf।বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মদ সাঃ pdf download । বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মদ সাঃ বই রিভিউ । বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মদ সাঃ বই । বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মদ সাঃ বই ডাউনলোড ।
বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মদ সাঃ pdf