দারবিশ : লতিফুল ইসলাম শিবলী
দারবিশ বই রিভিউ
দারবিশ নামটা অদ্ভুত। আর এই অদ্ভুত নামটিই আমাকে বইটি পড়তে আগ্রহী করে তুলে।তবে বইটি পড়ার পর যদি জিজ্ঞেস করা হয় এখনো কেন অদ্ভূত বলছি? তার উত্তরে বলব- অদ্ভুত এক জীবনদর্শনের উপন্যাস এই বইখানি।
শিরোনামঃ দারবিশ বই রিভিউ- লতিফুল ইসলাম শিবলী
বই | দারবিশ |
লেখক | লতিফুল ইসলাম শিবলী |
ধরন | উপন্যাস |
পৃষ্ঠা | ১১০ |
মূল্য | ৩০০ ৳ |
রিভিউ লেখক | সুমাইয়া আক্তার আঁখি |
লেখক পরিচিতি
আইয়ুব বাচ্চুর গাওয়া “হাসতে দেখো’গাইতে দেখো” গানটি সবার কাছে সমাদৃত।কমবেশি সবাই গানটি গুনগুন করে গেয়ে থাকে।কিন্তু এই গানের গীতিকারকে হয়তোবা আমরা অনেকেই চিনি না। আসুন সেই গানের গীতিকারের সাথে আমরা পরিচিত হই।হাসতে দেখো’গাইতে দেখো, কেউ সুখী নয়,পলাশী প্রান্তর, প্রিয় আকাশী,আমি কষ্ট পেতে ভালোবাসি,জেল খানা থেকে বলছি, হাজার বর্ষারাত…..
প্রভৃতি জনপ্রিয় গানের গাীতিকার হলেন লতিফুল ইসলাম শিবলী। তিনি বাংলাদেশের প্রখ্যাত গীতিকার,সুরকার এবং সঙ্গীতশিল্পী।নব্বই এর দশকে তিনি প্রায় তিন চারশো গান লিখেছেন। লিখেছেন কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ সহ একটি গবেষণাধর্মী প্রবন্ধগ্রন্থ। এছাড়া কাহিনী, সংলাপ,চিত্রনাট্য লিখেছেন “পদ্ম পাতার জল” নামে মুভির জন্য। একজন সফল নাট্যকারও বটে।অভিনয়ও করেছেন নাটকে। তার প্রিয় বিষয় কম্পারেটিভ আইডিওলোজি এন্ড রিলিজিয়ন স্টাডিজ,পলিটিক্স, হিস্ট্রি,এনভায়রনমেন্ট, পেইন্টিংস।
তিনি নাটোরে জন্মগ্রহণ করেন। জন্ম ১লা বৈশাখের সুবহে সাদিকের সময়।জন্মেই দেখেন বাংলাদেশে চলছে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি। তখন যুদ্ধ না বুঝলেও ৯০ এর দশকের স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনের ভেতর দিয়েই তাঁর বেড়ে ওঠা। শৈশব-কৈশোর আর তারুণ্যের শহর নাটোর,যৌবনের শহর ঢাকা আর লন্ডন। ওমর এবং ওসমান নামের দুই সন্তানের জনক তিনি।
দারবিশ : কাহিনী সংক্ষেপ
প্রেম, বিপ্লব এবং নিঃসঙ্গতার সংমিশ্রণ – দারবিশ।
জামশেদ উচ্চবিত্ত ঘরের সন্তান।কোনো কিছুর অভাব নেই তার। ছোট বেলার প্রেমিকা আফরোজা। আফরোজা চায় তার প্রেমিক একজন ডাক্তার হবে।তাই জামশেদ মেডিকেলে ভর্তি হয়।কিন্তু জামশেদ যখন মেডিকেল ফাইনাল ইয়ারে তখন আফরোজাকে লুকিয়ে অন্য একজনের সাথে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। এটা জামশেদ কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি।
জামশেদ তখন অনেকটাই উদ্ভ্রান্ত।তার হৃদয় তখন বিষযুক্ত তীরে অনবরত বিদ্ধ হতে থাকে।আর এই অভিমানী অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য আমেরিকায় পাড়ি জমায় জামশেদ। ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকা এবং ইউরোপ দুই বিশ্ব পরাশক্তির মাঝে স্নায়ু যুদ্ধ তুঙ্গে।আমেরিকার যুদ্ধবাজ সরকার এক নিষ্ঠুর খেলায় মত্ত। পুঁজিবাদের ভয়ংকর থাবা সর্বত্র।
তখন চলছিল ভিয়েতনাম তথা দ্বিতীয় ইন্দোচীন যুদ্ধ।উত্তর ও দক্ষিণ ভিয়েতনামের মধ্যে যুদ্ধ। এই দুই দেশের সাথে যুদ্ধ হলেও বিভিন্ন দেশ প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে যুক্ত হয়ে পড়ে। আর তাতে চৌকস, ধুরন্ধর আমেমিকা কি আর চুপ থাকে?আমেরিকা দক্ষিণ ভিয়েতনামকে প্রত্যক্ষ ভাবে সাপোর্ট করে।ভিয়েতনাম যুদ্ধে যাওয়ার জন্য আমেরিকা তার তরুণদের বাধ্য করে অথচ কোনো দেশে যুদ্ধ হলে সে দেশের তরুণ সমাজ আগে ঝাঁপিয়ে পড়ে ( বিশ বছরের যুদ্ধে নিহত হয়েছিল আটান্ন হাজার আমেরিকান সৈন্য আর আহত হয়েছিল লক্ষ লক্ষ সৈন্য)। আমেরিকার জনগন তখন যুদ্ধ বিরোধী কার্যক্রম এবং আন্দোলন শুরু করে।
৬০, ৭০ এবং ৮০ এর দশক ছিল আমেরিকান তরুণদের জন্য চরম হতাশার। ঠিক সেই সময় হতাশা,ক্ষোভ এবং দূরাবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার উদ্দেশ্যে গড়ে উঠে এক শান্তিকামী তরুণ প্রজন্ম~হিপ্পি। তারা প্রথার বিরুদ্ধে প্রথা,নিয়মের বিরুদ্ধে নিয়ম,সংস্কৃতির বিরুদ্ধে সংস্কৃতি গড়ে তোলে।যাকে বলা হয় “কাউন্টার কালচার”।তখন আমেরিকার তরুণ্যের জীবন মানেই সেক্স, ড্রাগস অ্যান্ড রক এন রোল।
আমেরিকার এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে জামশেদ সানফ্রান্সিসকোতে ডাক্তারি পড়তে যায়।তখন সানফ্রান্সিসকো ছিল হিপ্পিদের রাজধানী।সেখানে গিয়ে পরিচয় হয় মেলিনি নামের এক তরুণীর সাথে যে একজন সক্রিয় হিপ্পি কর্মী। মেলিনি একজন প্রখর রাজনীতি সচেতন দেশপ্রেমিক। মেলিনির সাথে পরিচয়ের পর জামশেদ হয়ে ওঠে বিশ্ব নাগরিক। যার নির্দিষ্ট কোনো দেশ নেই এবং দেশের সীমানা নেই। জামশেদ তখন একজন লম্বা চুল ওয়ালা হিপ্পি। এক পর্যায়ে দুইজন দুইজনের প্রেমে পড়ে।
ঠিক তখনই মেলিনির নামে চলে আসে ড্রাফট কার্ড। তার মানে বাধ্যতামূলক ভাবে তাকে ভিয়েতনামে যুদ্ধে যেতে হবে,মিলিটারি মেডিকেল কোরে। তাদের সুখের দিন আর থাকল না। সেসময় ভিয়েতনাম যুদ্ধ প্রতিবাদের অভিনব পন্থা ছিল ড্রাফট কার্ড পুড়িয়ে ফেলা আর ড্রাফট কার্ড পুড়িয়ে ফেলা রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ,এর শাস্তি ছিল ৫ বছরের জেল এবং দশ হাজার ডলার জরিমানা। সাহস,বুদ্ধিমত্তা, আদর্শবাদ মেলিনি সানফ্রান্সিসকো গোল্ডেন গেইট পার্কের সামনে প্রায় পাঁচ হাজার যুদ্ধ বিরোধী জনতার সামনে তার ড্রাফট কার্ডটি পুড়িয়ে ফেলে।
শুধু ড্রাফট পোড়ানো অভিযোগই নয়, কমিউনিস্ট দলগুলোর সাথে সখ্যতার জন্য মেলিনিকে সবাই রাশান (রাশিয়ান) স্পাই ভাবতে শুরু করে।যাকে হন্যে হয়ে খুুঁজছে এফবিআই, সারা দেশে রেড এলার্ট জারি করা হয়,বর্ডারে নজরদারি বাড়িয়ে দোওয়া হয়।এরপর শুরু হয় তাদের পলাতক জীবন। তারা সিদ্ধান্ত নেয় সীমান্ত পথে টেক্সাস থেকে মেক্সিকো যাবে।
আমেরিকার সাথে মেক্সিকোর সীমান্ত দৈর্ঘ্য প্রায় দুই হাজার মাইল।এই সীমান্ত পথে মেক্সিকো থেকে আমেরিকায় ঢোকে সব ধরণের মাদক আর আমেরিকা থেকে মেক্সিকোয় ঢোকে অস্ত্র। আমেরিকা হলো দ্যা ল্যান্ড অব গানস। সীমান্তের দুই পাড়েই তৎপর ভয়ংকর অস্ত্রধারীরা। ইউ এস বর্ডার পেট্রোল বাহিনীর সাথে মাদক চোরাকারবারিদের সংঘর্ষ আর খুনোখুনি এই সীমান্তের প্রতিদিনের বিষয়।পুরো সীমান্তের দুই পাশে ভাগাভাগি করে রাজত্ব করে ড্রাগ কার্টেল গুলো। এর মধ্যে ভয়ংকর কার্টেলের নাম লস জিতাস।
লস জিতাস আর গাল্ফ কার্টেলের প্রভাব বিস্তারের লড়াইটা তখন গৃহযুদ্ধে রূপ নিয়েছে। প্রয়োজন প্রচুর অস্ত্র আর গোলাবারুদ। ঘটনাক্রমে জামশেদ আর মেলিনি লস জিতাসের এক দালালের খপ্পড়ে পড়ে। সেই দালাল জামশেদ আর মেলিনিকে শর্তাধীন করে। শর্ত হলো: চোরাই পথে মেক্সিকো যেতে হলে লস জিতাসের জন্য তাদের সাথে অবৈধ অস্ত্র নিতে হবে না হলে তাদের এফ বি আইয়ের হাতে ধরিয়ে দিবে।
অগত্যা জামশেদ আর মেলিনি সেই শর্ত মেনে নেয়।
মেলিনিকে নিয়ে টেক্সাস থেকে চোরাইপথে মেক্সিকো ঢোকার পথে জামশেদের জীবনে ঘটে এক চরম বিপর্যয়। মেলিনি পার হলে গেলেও জামশেদ ধরা পড়ে ইউ এস সীমান্ত সৈন্যদের হাতে। তার উপর আনা গুরুতর অভিযোগগুলো ছিল: অস্ত্র ও মাদক চোরা চালান,আমেরিকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, অ্যাটেম্পট টু মার্ডার,ইউ এস বর্ডার পেট্রোল।
সাত বছরের জেল হয় জামশেদের।টেক্সাসের হাই সিকিউরিটি প্রিজম সেলে দাগী আসামীদের সাথে রাখা হয় তাকে। এই সাত বছরের জেল জীবনে কেউ তার সাথে দেখা করতে যায় নি।
জেল থেকে বের হয়ে জামশেদ হয়ে উঠল একজন তুখোড় জুয়াড়ি (যে জামশেদ আগে কোনোদিন জুয়া খেলেনি)। তারপর ক্যাসিনো থেকে ক্যাসিনো জুয়া খেলে বেড়িয়েছে আর কামিয়েছে অঢেল অর্থ সম্পদ।জামশেদ ক্যাসিনো থেকে ক্যাসিনো ঘুরে বেড়িয়েছে মূলত মেলিনির খোঁজে(ড্রাগ কার্টেলগুলোর সাথে ক্যাসিনোগুলোর গোপন আঁতাত থাকে)। কিন্তু কোথাও খুঁজে পায় নি মেলিনিকে। ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকা হারিয়েছে তার ৫৮ হাজার দুইশত বিশ জন সোলজার আর জামশেদ হারিয়েছে তার মেলিনিকে।
অভিমান নিয়ে দেশ ছেড়ে যাওয়া জামশেদ অবশেষে ৭০ বছর বয়সে ফিরে আসে তার সিটি অব মিউজিক ঢাকাতে। ( রিকশার টুংটাং পিয়ানোর সাথে দিনে পাঁচবার মুয়াজ্জিনের কণ্ঠ যখন মিলে যেত তখন এই শহর হয়ে যেত সিটি অব মিউজিক,লেখকের ফেলে যাওয়া শহর)
বিদেশ ফেরত জামশেদের ফুসফুসে বাসা বাঁধে ক্যান্সার। স্কোয়ামাশ সেল কারসিনোমা,স্টেজ ফোর।ডাক্তাররা তাকে জানিয়ে দেয়, স্টেজ ফোরে কিছু করার নাই।
সঞ্জু আর রোদেলা একে অপরকে ভালোবাসে।কিন্তু দুইজন দুইমেরুর মানুষ।সঞ্জুর ভিতরে হাজারটা জিনিস রয়েছে রোদেলার অপছন্দের। রোদেলা কবিতা পছন্দ করে কিন্তু কবিতা সঞ্জুর কাছে বিষের মতো হয়।সঞ্জু সিগারেট খায়,আর সিগারেটের গন্ধে রোদেলার বমি আসে। রোদেলার সবচেয়ে অপছন্দের বিষয় হল মিথ্যা বলা, সঞ্জু সেটা খুব কনফিডেন্টলি করে আর এখানেই লুকিয়ে আছে এই জুটির ভালোবাসার রহস্য। সঞ্জুর প্রতিটি মিথ্যা রোদেলা ধরতে পারে। সঞ্জু যখন মিথ্যা বলে তখন তাকে একটা শিশুর মতো দেখায়। এই শিশুর সারল্য রোদেলা আর কোনো পুরুষের মধ্যে দেখেনি।রোদেলা সঞ্জুর এই সরলতাকে ভালোবাসে।
রোদেলা , জামশেদের পার্সোনাল সেক্রেটারি।মানুষের সান্নিধ্য পাওয়া এবং নিজের নিঃসঙ্গতা, অসুস্থতা থেকে সাময়িক প্রশান্তির জন্য মূলত জামশেদ পার্সোনাল সেক্রেটারি নিয়োগ দেয়।
জামশেদ জীবনের পড়ন্ত বিকেলে এসে রোদেলাকে (পার্সোনাল সেক্রেটারি) তার জীবনে পরতে পরতে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো শুনায় এবং প্রচন্ড জীবনবোধের বীজ বুনে দেয় রোদেলার মননে।
কিন্তু সঞ্জু, রোদেলাকে জামশেদের পার্সোনাল সেক্রেটারি হিসেবে মেনে নিতে পারে নি। তার ধারণা টাকাওয়ালা বুড়া জামশেদ, রোদেলাকে রক্ষিতা হিসেবে ব্যবহার করছে আর কামুক রোদেলা সেজেগুজে জামশেদের মনোরঞ্জন করতে যায়।এই নিয়ে রোদেলা আর সঞ্জুর মাঝে দুরত্ব সৃষ্টি হয়।তাদের সম্পর্কের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি হয়।
একসময় জামশেদই সঞ্জুর ধারণা পাল্টে দিয়ে অনন্ত কালে পাড়ি জমায় আর সঞ্জু নিজের ভুল বুঝতে পেরে রোদেলার কাছে ফিরে আসে।
বইটি পড়তে গিয়ে আমি মনের অজান্তে নিজে কখনো মেলিনি এবং রোদেলা হয়ে গেছি। সঞ্জু বর্তমান সমাজের গড়পড়তা প্রেমিকের প্রতিচ্ছবি।
বইটির যে উক্তিগুলো আপনাকে জীবনবোধ নিয়ে নতুনকরে ভাবাবে:
★সুর যখন ক্ষমতায়, সাম্রাজ্য তখন নির্জনতায়।
★তুমি যখন কোনো ইন্টারভিউ ফেস করবে তখন মনে করবে তুমি ইন্টারভিউ দিচ্ছ না, তোমার সামনের লোকটির ইন্টারভিউ নিচ্ছ তুমি।সে যেমন তার কাজের জন্য একটা যোগ্য লোক খুঁজছে তেমনি তুমিও যোগ্য ইমপ্লয়ার খুঁজছ, যে তোমার চাহিদাগুলো পূরণ করবে।
★ বিশ্বাস বড় দামি জিনিস, এর জন্য কিছু মূল্য দিতে হয়।
★জীবন যতক্ষণ রহস্যময় ততক্ষণই এটা যন্ত্রনা আর হতাশার। যারা জীবনের রহস্য জেনেছে তারাই পেরেছে সুখী হতে।
★আমার এক স্কয়ার মিটারের মধ্যে যা আছে এর বাইরে কোনো কিছুই আমার না।তোমার জমিন সেটুকুই যে টুকুর ওপর তুমি দাঁড়িয়ে বা বসে আছ।তোমার টাকা সেটুকুই যে টুকু এখন তোমার পকেটে আছে।যদিও তোমার ব্যাংকে হাজার কোটি টাকা আছে—–তোমার খাদ্য সেটুকুই যে টুকু তোমার পেটে চলে গিয়েছে——যদিও তোমার টেবিল ভরা খাবার। তোমার পোশাক সেইটুকুই যা তুমি এই মুহূর্তে এখন পরে আছ,যদিও তোমার ওয়ারড্রোব ভরা কাপড়। অনেক কিছুর মালিকানা আসলে সেন্স অব ওনারশিপ।
★জীবনের শেষ প্রান্তে এলে মানুষের কষ্টের মূল হয় কারণ মনে থাকা।যত ভুলে থাকা যায় তত ভালো থাকা যায়।
★ মানুষের সাথে সম্পর্কের ভিতরে যে রাগ, অভিমান, হিংসা,পরশ্রীকাতরতা, অহংকার, লোভ কাজ করে এসব আসলে তাকে শাস্তি দেয়। যখন কারো প্রতি কারো রাগ তৈরী হয় তখন অন্যের প্রতি তৈরী হওয়া রাগের আগুনে সে নিজেই পুড়তে থাকে,অন্যকে পোড়ানোর আগেই।
★মানুষকে ক্ষমা করতে না পারলে মৃত্যুর পূর্বেই এই পৃথিবীটা তার জন্য নরক হয়ে উঠবে। সুখী হতে হলে ক্ষমা করো আর ভুলে যাও।
★যতক্ষণ পর্যন্ত তোমার হাতে অপশন আছে ততক্ষণ তোমার ভাগ্যের নিয়ন্ত্রক তুমি,আর কোনো অপশন না থাকলে স্রোতের উপর ভাসিয়ে রাখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
★নারীর সম্পূর্ণ পাওয়াটা বুঝতে না পারাটাই ভালোবাসার ব্যর্থতা।
★গভীর সম্পর্কে শব্দ নয় অনুভূতিতে কথা হয়। সে সম্পর্ক যত গভীর সে সম্পর্ক ততটাই বাক্যহীন।
★আর্দশ সেই শক্তির নাম যেটা দিয়ে তুমি আমার সাথে কথা বলবে,বিতর্ক করবে,আমার ভুলগুলো তোমার আর্দশিক বুদ্ধিমত্তা দিয়ে শুধরে দিবে।আর দিনশেষে ভালোবেসে আমি তোমাকে গ্রহণ করতে পারি অথবা বাতিল করে দিতে পারি।
★বন্দুক দিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করা সহজ কাজ কিন্তু আর্দশ দিয়ে মানুষের চিন্তাকে পালটে দেওয়া কঠিন কাজ।
★দেশ দখলের চেয়ে হৃদয় দখল করা অনেক কঠিন।
★প্রকৃত ভালোবাসা মানুষের আত্মাকে এক করে ফ্যালে, যেমন পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীর রক্ত এক।
★অনেক সময় ঘরের চেনা তালাটাও একবারে খোলে না।
★সত্যকে বাঁচার জন্য কোনো আশ্রয়ের প্রয়োজন হয় না,সত্য নিজ শক্তিতেই বাঁচে।
মিথ্যার নিজের কোনো শক্তি নেই,নিজেকে বাঁচার জন্য তার আশ্রয় লাগে। ক্রোধ, চিৎকার,গালাগালি, অভিমান, হিংসা,কূটকৌশল, অহংকার এসবের মধ্য দিয়ে মিথ্যা শক্তি পায়, এসবের মধ্য দিয়ে মিথ্যা প্রকাশ পায়।
★ভালোবাসা মানে ভালোবাসার মানুষটির কল্যাণ চাওয়া,ভালো চাওয়া, সে যেটাতে খুশি হয় সেই খুশিটাই কামনা করা।ভালোবাসা মানে তার সবকিছুকে ভালোবাসা।
★যদি স্রষ্টাকে ভালোবাস তবে তার সমস্ত সৃষ্টি জগতকে ভালোবাসবে। এই মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তু একে অন্যকে টানে,এই টানেরই এক নাম মায়া অন্য নাম ভালোবাসা।
★ভালোবাসা আর বিশ্বাসহীন জীবন, মাঝিহীন নৌকার মতো।
সর্বশেষ, উপন্যাসটি পডলে ভালো লাগবে যা একজন পাঠক পড়েই দেখুক
people search also: দারবিশ বই রিভিউ boi. দারবিশ বই রিভিউ বই। দারবিশ বই রিভিউ পিডিএফ