একজন কমলালেবু উপন্যাস pdf

একজন কমলালেবু উপন্যাস pdf

একজন কমলালেবু  শাহাদুজ্জামান
রূপসী বাংলার কবি, নির্জনতার কবি জীবনানন্দ দাশের ব্যক্তিগত ও সাহিত্য জীবন নিয়ে কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামান রচিত বই ‘একজন কমলালেবু’। বইটিকে লেখক আত্মজীবনী না বলে উপন্যাস হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

একজন কমলালেবু
লেখক :            শাহাদুজ্জামান
প্রকাশনা :         প্রথমা প্রকাশনী
পাতা সংখ্যা :     ২৪২
মূল্য :             ৪৫০ টাকা
রিভিউ লেখক :  আব্দুর রাজ্জাক

🔷🔷 একজন কমলালেবু : উপন্যাসের নামকরণ

জীবনানন্দের শরীরের অবনতি ঘটছে শুনে সঞ্জয় অবশেষে দেখতে এলেন হাসপাতালে। জীবনানন্দ চোখ মেলে দেখলেন সঞ্জয়কে। সঞ্জয়ের হাতটা নিজের গালের উপর রাখলেন তিনি। জড়ানো গলায় বললেন, ‘একটা কমলালেবু খেতে পারব?’ ‘কমলালেবু ‘ নামে একবার একটা কবিতা জীবনানন্দ লিখেছিলেন :

“একবার যখন দেহ থেকে বা’র হ’য়ে যাব
আবার কি ফিরে আসবো না আমি পৃথিবীতে?
আবার যেন ফিরে আসি
কোনো এক শীতের রাতে
একটা হিম কমলালেবুর করুণ মাংস নিয়ে
কোনো এক পরিচিত মুমূর্ষুর বিছানার কিনারে।”

মৃত্যুপথযাত্রির চোখে উজ্জ্বল টইটুম্বুর কমলা জীবনের মহমানতারই আহ্বান। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে জীবনানন্দ যখন একটা কমলা খেতে চাচ্ছেন। তখন তিনি নিজেই মুমূর্ষ। মৃত্যুর মুখোমুখি দাড়িয়ে মৃত্যুর পরের তার কাঙ্ক্ষিত কমলারুপী নিজেকেই খুঁজছিলেন যেন তিনি৷

চাঁদের পাহাড় pdf রিভিউ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

অন্নদাশঙ্কর জীবনানন্দকে বলেছেন– শুদ্ধতম কবি, মার্কিন গবেষক ক্লিনটন বি সিলি বলেছেন– A Poet Apart, বুদ্ধদেব বসু তাকে বলতেন– নির্জন কবি, বিনয় মজুমদার ডেকেছেন– ধূসর। আর শাহাদুজ্জামান এবার জীবনানন্দকে ডাকলেন সম্পূর্ণ এক নতুন নামে ‘একজন কমলালেবু’ বলে। কেন এই এই নামকরণ? কেন এই নামে ডাকা?
জীবনানন্দ দাশের ” কমলালেবু ” কবিতাটি থেকেই শাহাদুজ্জামান উপন্যাসটির নামকরণ করেছেন। সেটা পাঠক প্রথমে বুঝতে না পারলেও উপন্যাসটির শেষের দিকে বুঝতে পারবে অনায়াসেই। এ কারণেই শুধু নয়, জীবনানন্দের জীবনটাও বুঝি কমলালেবুর মত গোল, চক্রাকার, অস্থায়ী।

শাহাদুজ্জামান বলেছেন, “শৈশব (ছোটবেলা) থেকে জীবনানন্দের যে ভূত আচ্ছন্ন হয়ে তার উপর আছর করেছে; সেই ভূতকেই যেন নিজে ওঝা হয়ে নামাতে চান ‘একজন কমলালেবু’ লেখার মাধ্যমে।”

শাহাদুজ্জামান জীবনানন্দ আবিষ্কারে নেমেছেন। পড়ে ফেলেছেন জীবনানন্দের সকল সাহিত্য কর্ম।
একজন কমলালেবু’র পেছনে গ্রন্থপঞ্জি ঘাঁটলে দেখা যায় জীবনানন্দ নিয়ে আজ পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য যেকোন ধরনের লেখাই তার রেফারেন্স থেকে বাদ যায়নি। এ থেকে বুঝা যায় জীবনানন্দের জীবনের ঘোরতর জটিলতা আর রহস্য আবিস্কারের পর তিনি একটা সাহিত্য কর্মে হাত দিয়েছেন। মাঠে অভিজ্ঞ কৃষকের ধান লাগানোর মত একদম পরিপাটি আর গুছালোভাবে জীবনানন্দের জীবনকে রোপণ করেছেন উপন্যাসের পাতায়।

বাংলা সাহিত্যের প্রহেলিকাময় এই মানুষ জীবনানন্দ দাশের সঙ্গে এক নিবিড় বোঝাপড়ায় লিপ্ত হয়েছেন এ সময়ের শক্তিমান কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামান তাঁর “একজন কমলালেবু” উপন্যাসে।”

📙📙 উপন্যাসের সারসংক্ষেপ

শাহাদুজ্জামান জীবনানন্দের রহস্যজনক ট্রাম দূর্ঘটনার মধ্যে দিয়েই উপন্যাসটি শুরু করেন। জীবনানন্দের ডায়েরী ঘেটে তার বিশ্লেষণ করেন।
জীবনানন্দ বুঝি আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রেখেছেন ট্রাম্প দূর্ঘটনার মধ্যে দিয়েই চলে যাবেন আমাদের ছেড়ে। কারণ তার একটা কবিতা এমন :

“কলকাতার ফুটপাত থেকে ফুটপাতে- ফুটপাত থেকে ফুটপাতে-
কয়েকটি আদিম সর্পিণী সহোদরার মতো এই যে ট্রামের লাইন ছড়িয়ে আছে
পায়ের তলে, সমস্ত শরীরের রক্তে এদের বিষাক্ত বিস্বাদ স্পর্শ অনুভব করে হাঁটছি আমি।”

এটা দূর্ঘটনা? নাকি আত্মহত্যা? অথবা হত্যাকাণ্ড।
এই রহস্য এখনও ধোঁয়াশায় রয়ে গেল।

১৮৯৯ সাল। বরিশালের বগুড়া রোড আর গোরস্থান রোডের কোনার বাড়িতে কুসুমকুমারীর কোলে জন্মনিলেন জীবনানন্দ দাশ। ডাক নাম মিলু। জীবনানন্দ কুসুমকুমারীর প্রথম সন্তান। হয়ত সে ছেলের দিকে তাকিয়েই তিনি লিখলেন:

আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে?
কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে,
মুখে হাসি, বুকে বল, তেজে ভরা মন,
‘মানুষ হয়তে হ’বে -এই তার পণ।

জীবনানন্দ দাশ মায়ের এই কবিতার ছেলে প্রকৃতপক্ষে হতে পারেননি। তিনি জীবনের শুরুতেই মাত্র কয়েক নাম্বারের জন্য ফার্স্ট ক্লাস পাননি যা তাকে পুরো জীবন ভুগিয়েছে। চাকরি করতে গিয়ে বারবারই নিজের যোগ্যতার চাইতে বাবার সুপারিশ বা কারো অনুকম্পার বদৌলতে শিক্ষকতাকেই পেয়েছেন যদিও কখনো কীর্তিমান বা জনপ্রিয় শিক্ষক হতে পারেননি। একবার পেয়েছিলেন সংবাদপত্রের চাকরি যা তিনি নিজেই করতে পারেননি; ছেড়ে দিয়েছেন অন্য আর সব চাকুরির মত!।

জীবনানন্দের ছোট বেলাতেই হলো জণ্ডিস। টানাপোড়েনের সংসারে চিকিৎসা যেন বিলাসিতা। তবুও ছেলেকে বাঁচাতে কুসুমকুমারী গেলেন কলিকাতায়। জীবনানন্দ সুস্থ হলেন। পা দিলেন কৈশোরে।

কুসুমকুমারী দাশ জীবনানন্দকে মাঝে মধ্যেই কবিতা লিখতে বলতেন। কিন্তু জীবনানন্দ লিখতেন না। কবির ছেলেকে কবি হতেই হবে এমন কোন গণিত নেই। ১৯১৯ বয়স যখন বিশ তখন জীবনানন্দের প্রথম কবিতা প্রকাশ হলো ব্রাম্মবাদী পত্রিকায়। অনেকটা মায়ের নির্দেশেই তিনি কবিতাটি লিখেছিলেন।

তারপর দীর্ঘ বিরতি। আর কিছুই লেখেননি। এরমধ্যে জীবনানন্দ পাশ করেছেন এমএ। ১৯২৫ সালে হুট করে একটা কবিতা লিখলেন। রাজনৈতিক কবিতা। প্রকাশ হলো “বঙ্গবাণী”র বিশেষ সংখ্যায়।

এভাবেই শাহাদুজ্জামান তার “একজন কমলালেবু “উপন্যাসে জীবনানন্দকে ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করেছেন। বইটিতে জীবনানন্দের কবিতাগুলোর পোস্টমর্টেম করেছেন তিনি। গল্প, উপন্যাসগুলোর বাখ্যা বিশ্লেষণ করে জীবনানন্দের এ আবিস্কার অসাধারণ শৈল্পিকভাবে করেছেন শাহাদুজ্জামান। জীবনানন্দের রেখা যাওয়া ডায়েরি থেকে পেয়েছেন অনেক তথ্য। তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে এসে দাড়িয়েছেন একটা সিদ্ধান্তে।

ব্যক্তি হিসাবে জীবনানন্দ মিশুক ছিলেন না। অর্থহীন কথার, আর হাসিতামাশার আসরে কোনদিন স্বাচ্ছন্দবোধ করেননি তিনি। মানুষের সাথে ভাব জমানোর দক্ষতা অর্জন করতে পারেননি কোনদিন৷ অন্তর্মুখী চরিত্রের অধিকারী যেমন ছিলেন তেমনি বাকপটু বা সুদর্শনও ছিলেন না; ফলে তার চারপাশের নিয়ন্ত্রণ তার নিজের ওপর কখনই ছিলনা। তিনি সে সময় যেসব কবিতা লিখেছেন পাঠক সেগুলো নিতে পারেনি। পাঠক খুব অল্পই তৈরী হয়েছিল তার।

আরও এখুনঃ দারবিশ বই রিভিউ- লতিফুল ইসলাম শিবলী

১৯২৭ সালে সম্পূর্ণ নিজের খরচ প্রকাশ করলেন “ঝরা পালক ” কাব্যগ্রন্থ। উৎসর্গ পৃষ্ঠায় লিখা ছিলো “কল্যাণীয়াসুকে”। এই কল্যাণীয়াসু ছিলেন তাঁর কাকাতো বোন শোভনা দাশ ওরফে বেবী।বেবীর সাথে তার ক্ষণকালের সুতীব্র প্রেম ছিলো তার। সেই প্রেমে সারাজীবন পুড়েছেন জীবনানন্দ।ডায়েরিতে বেবীকে নিয়ে অজস্র লিখার সন্ধান পাওয়া যায়।মজার ব্যাপার হচ্ছে হচ্ছে শোভনা ওরফে বেবীকে তিনি ডায়েরি তে ইংরেজি ‘Y’ অক্ষরে লিখেছেন।

“একদিন খুঁজেছিনু যারে
বকের পাখার ভিড়ে বাদলের গোধূলি-আঁধারে,
মালতীলতার বনে,- কদমের তলে,
নিঝুম ঘুমের ঘাটে,-কেয়াফুল,- শেফালীর দলে!”

এভাবেই সারাজীবন শোভনাকে খুঁজেছেন। কিন্তু পাননি।

“ঝরা পালক ” নিয়ে রবীন্দ্রনাথ কটাক্ষ করেছিলেন। হয়েছিল সমালোচনা। পাঠক প্রিয়তাও পায়নি একদম। তখন তার কবিতার একমাত্র বন্ধু বুদ্ধদেব বসু।

তিনি বিয়ে করেছিলেন শিক্ষিতা, ইডেন পুড়ুয়া লাবণ্যকে। মোটামুটি পরিবারের পছন্দেই, নিজের পছন্দ “শোভনা” তখন তার জীবন থেকে অনেক দূরে দাঁড়িয়ে, ধরাছোঁয়ার বাইরে, যদিও সারাটা জীবন সেই স্মৃতি নিয়েই কাটিয়েছেন। যে স্মৃতিকে ভুলে গিয়ে নতুন করে ভালোবাসার জগত তৈরী করতে জীবনানন্দ চেয়েছিলেন, বিয়ের পরপরই হঠাৎ করে চাকরি চলে যাওয়া, নিজের জগতের মাঝে স্ত্রীকে না জড়াতে পারার ব্যথতা বা শিক্ষিত ও প্রগতিশীল স্ত্রীকে নিজের মত ভাঙতে গড়তে না পারার ব্যর্থতা – সবমিলে বেকার প্রায় ৫ বছর তাকে বানিয়েছে অন্য এক মানুষ। অস্বাভাবিক এক বাস্তবতা আর পরাবাস্তবতার মাঝে ঘুরে বেড়িয়েছেন। ক্ষুধায় চড়ুইয়ের খাবারেও ভাগ বসাতে চেয়েছেন, হেন চাকুরি বা ব্যবসা নেই যার সম্ভবনার কথা ভাবেননি। জীবনে বারবার দারিদ্রতা তার থাবা বসিয়েছে; তিনি একটি চাকরির জন্য, সামান্য অর্থের জন্য অনুজের কাছে গেছেন, অকবিদের কাছে গেছেন। কিন্তু কিছুই তাকে ধরা দেয়নি। ফলে সময়ের স্রোতে তিনি আর স্বাভাবিক থাকেননি; খুব রুঢ়ভাবে বুঝেছেন দারিদ্রকে, জীবনে না পাওয়ার কষ্টকে; সুহৃদহীন এক অনন্ত একাকী জীবন। যার জন্য খেতাব পেয়েছেন “নির্জনতার কবি” হিসেবে। নানা বোধ খেলা করেছে তার মনে। অনি:শেষ অনুভূতির সাগরে ভাসতে ভাসতে শেষে আবিষ্কার করেছেন তার চেতনাকে; তাকে বলেছেন “বিপন্ন বিষ্ময়”!

জীবনানন্দ সংসারের কোন কাজেই দক্ষ ছিলেন না। ছেলেমেয়েদের জন্য করতে পারেননি তেমন কিছুই, লাবণ্যের ভাষ্যে শুধু “নিখুঁত করে পেন্সিল কেটে দেয়া” ছাড়া! লাবণ্য গুপ্ত জীবনানন্দের জীবনে কোন লাবণ্য আনতে পারেননি এবং তার জীবনে শেষ পর্যন্ত আর কোন নারী আসেনি।

জীবনানন্দের সারাটি জীবন কেটেছে মানুষের অবহেলা, বিদ্রুপে। প্রেমে, দাম্পত্যে, সাহিত্যে কর্মজীবনে চরম ব্যর্থতায় জর্জরিত তিনি। ব্যক্তি আক্রমণের স্বীকার হয়েছন বহুবার। সজনীকান্ত নামক এক সমালোচক জীবনানন্দের কবিতা নিয়ে কম হাসিহাসি করেননি। তাকে বলা হয়েছে পাগল। এমনকি তার লেখাকে অশ্লীলও বলা হয়েছে। সাহিত্যে যখন তখনকার কবিরা এগিয়ে যাচ্ছেন অর্থ নাম, যশ, খ্যাতি অর্জন করছেন তখন জীবনানন্দ দেখেছেন পৃথিবীতে অদ্ভুত এক আধার।

কেউ বুঝেনি তাকে৷ তবুও জীবনানন্দ সাহস হারাননি। আজ না হক মৃত্যুর পর তার সাহিত্য কর্ম আলোড়িত করবে বিশ্বকে। লিখেছেন,

” সে অনেক শতাব্দীর মনীষীর কাজ;
এ-বাতাস কি পরম সূর্যকরোজ্জ্বল;
প্রায় তত দূর ভালো মানব-সমাজ
আমাদের মতো ক্লান্ত ক্লান্তিহীন নাবিকের হাতে
গ’ড়ে দেবো, আজ নয়, ঢের দূর অন্তিম প্রভাতে।”

কিন্তু মৃত্যুর পর খ্যাতি অথবা নাম কি উপকার আসবে তার। জীবনানন্দ তার এক কবিতায় বিষয়টি উপস্হাপন করেছেন এভাবে –

“মানুষটা মরে গেলে যদি তাকে ওষুধের শিশি
কেউ দেয়-বিনি দামে -তবে কার লাভ -“।

সজনীকান্ত জীবনানন্দকে সবচেয়ে বিদ্রুপ করেছেন,তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছেন, অপমান করেছেন। জীবনানন্দের কবিতার সমালোচনা করেছেন। অশ্লীলতার তকমা লাগিয়েছেন। সেই সজনীকান্ত জীবনানন্দের সবচেয়ে নাজুক সময়ে এসে বললেন, ” আমি কি জানতাম জীবনানন্দ বাবু কত বড় মানুষ, কত বড় কবি। নইলে শুধু তার কবিতা নিয়ে এত কথা বলার তো দরকার হত না আমার “।

ট্রামের ক্যাচারে আটকে যাওয়ার মতো সেই দুর্ঘটনা এর আগে কখনো হয়নি এমনকি তার পরেও নয়। রাত ১১টা ৩৫ মিনিটে ডাক্তার জীবনানন্দকে মৃত ঘোষণা করলে সঞ্জয় ভট্টাচার্য লিখেন, ‘একটি জাহাজ ছেড়ে গেল…।

আরও দেখুনঃ দি আইশ্যাডো বক্স বই রিভিউ

ঘোর এক রহস্য রেখে গেলেন জীবনানন্দ। শাহাদুজ্জামান বলেন, শূন্যে অবশ্য ভেসে রইলো অমীমাংসিত সেই জিজ্ঞাসা,জীবনানন্দের মৃত্যু তাহলে কী——
দুর্ঘটনা?
আত্মহত্যা?
নাকি হত্যাকান্ড?
যার পেছনে রয়েছে অনেকের অদৃশ্য হাত?

একজন কমলালেবু উপন্যাস pdf । একজন কমলালেবু উপন্যাস বই। একজন কমলালেবু উপন্যাস pdf ডাউনলোড করুন একজন কমলালেবু উপন্যাস pdf ডাউনলোড করুনঃ

একজন কমলালেবু উপন্যাস