শিশুর প্রতি আপনার আচরণ কেমন হওয়া উচিত?

শিশুর প্রতি আপনার আচরণ কেমন হওয়া উচিত?

শিশুর প্রতি আপনার আচরণ

বলা হয়ে থাকে, আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। সেই শিশুরা একটি দেশের বা পৃথিবীর উপযুক্ত কর্ণধার হয়ে ওঠার জন্য আমাদেরকেই কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। অর্থাৎ, পিতা মাতা,পরিবার এমনকি সমাজের প্রত্যেকের উচিত শিশুদের সাথে সঠিক আচরণ করা। তবেই তারা সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠবে। সেজন্য প্রয়োজন আমাদেরকে সাবধান হওয়া,শিশুর প্রতি যত্নবান হওয়া এবং নিজেদের আচরণের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা।

শিশুর প্রতি আমাদের যেমন আচরণ করা উচিত তা নিয়ে কিছু কথা-

সর্ব প্রথম যেটা করতে হবে তা হচ্ছে, অন্যকে সহযোগিতা করতে উৎসাহিত করা। দুর্বল,বৃদ্ধ বা অসুস্থ ব্যক্তিকে তার কাজে সাহায্য করতে উৎসাহ প্রদান করার ফলে শিশু মানবিক হতে শিখবে। পরিবারে বা বাইরে এমন ব্যক্তির প্রতি আপনার কৃত আচরণ থেকে শিশু শিক্ষা নেবে। তবে মনে রাখতে হবে শুধুমাত্র নীতি কথা বলে শিশুকে কিছু শেখানো যাবে না। তারা দেখে শিখবে। তাই আপনি তাদের সামনে সতর্ক থাকাটা জরুরি।

👉 ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণে কি খাবেন 

✅ শিশু যদি কোনো ব্যাপারে রেগে যায় তবে আপনি তার কারন জানার চেষ্টা করুন, তার কথা শুনুন। এতে শিশু আপনার সাথে সহজ হবে এবং বিনয়ী হতে শিখবে।
আপনি বুঝতে পারছেন বাচ্চার খুদা লেগেছে, আপনি হয়তে কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছেন আর তা শেষ হতে মাত্র কয়েক মিনিট সময় লাগবে। তাহলে আপনি হাতের কাজ ফেলে তাকে খাওয়াতে চলে যবেন না। বরং কাজটা শেষ করে তাকে খেতে দিবেন। এতে তার ক্ষতি হবে না, তবে সে সংযমী হতে শিখবে।
✅ শিশু যা চায় তা সাথে সাথে দিয়ে দেয়ার সামর্থ্য থাকলেও মাঝে মাঝে একটু কালক্ষেপণ করুন। সকালে চকোলেট চাইলে তাকে বুঝিয়ে বলুন যে বিকেলে দিবেন বা কয়েক ঘন্টা পর দিবেন। এভাবে সে ধৈর্য ধারণ করতে শিখবে।
✅ আপনার শিশুর সাথে সত্য কথা বলুন। সবসময় তা সম্ভব না হলে ইতিবাচক ভঙ্গিতে কথা বলুন। ফলে সে সততা ও সত্যবাদিতা শিখবে।
আপনার শিশুর আচরণ অস্বাভাবিক মনে হলে তার মানসিকতা বুঝতে চেষ্টা করুন। তাকে কথা বলার সুযোগ দিন। তার সাথে কথা বলুন। অযথা রাগারাগি বা তাকে প্রহার করা থেকে বিরত থাকুন। তাকে সময় দিন, সহজ হতে দিন।
✅ সবসময় পরিপাটি থাকার চেষ্টা করুন কারন শিশু কখন কোনটা শিখে ফেলে তা বোঝা যায় না। যেমন পরিবেশে শিশু বড় হবে সে তার জীবন তেমন করেই সাজাতে চাইবে। তাই ঘরদোর পরিস্কার ও পরিপাটি রাখার চেষ্টা করুন, সেই সাথে পরনের পোষাকও।
শিশুকে খেলাধুলা করতে নিষেধ করা ঠিক নয়। খেলার পরিবেশ না থাকলে তাকে ব্যয়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। সম্ভব হলে আপনি তার সাথে খেলা করতে পারেন বা আপনার টুকিটাকি কাজে তার সাহায্য চাইতে পারেন। এতে তার শরীর সুস্থ থাকবে, মন ভালো থাকবে এবং সে কষ্ট সহিষ্ণু হতে শিখবে। তবে খেলা বা কাজে বৈচিত্র্য আনা জরুরি।
✅ শিশুর শারীরিক কসরতের পাশাপাশি তাকে মানসিক ভাবেও শক্ত করে গড়ে তোলা দরকার। এর জন্য মাঝে মাঝে তাকে কিছু কাজ দিন বা কোনো দায়িত্ব দেওয়া যায়। যা তাকে বাস্তব জীবন সম্পর্কে সজাগ করে তুলবে, এতে যে কোন ব্যাপারে সে আবেগী হওয়ার বদলে চিন্তা করতে পারবে।
✅ শিশুকে সম্ভব হলে ভালো চরিত্রের ব্যক্তির সাথে মিশতে দিন। এতে সে ভালো গুনের চর্চা করা শিখবে এবং বন্ধু নির্বাচনে সতর্কতা অবলম্বন করতে পারবে।
✅ পরিবারে ছোটখাট ব্যাপারে শিশুর মতামত নিন। যেমন আপনারা কোথায় বেড়াতে যেতে চান, ছুটির দিনে কোন বিশেষ খাবার রান্না করবেন, শিশু কখন পড়তে বসতে চায়, কোন বইটি আগে পড়তে চায়, কোন ড্রেসটি পরতে চায় ইত্যাদি। এসব বিষয়ে তাদের মতামত নেয়া উচিত। এতে তারা দায়িত্ববান হতে শিখবে এবং হীনমন্যতার শিকার হবে না। সেই সাথে তাকে শেখান কিভাবে অল্প কথায় নিজেকে ওজস্বীভাবে উপস্থাপন করা যায়। এতে করে সে ব্যক্তিত্ববান হওয়ার শিক্ষা পাবে।

আরও দেখুনঃ মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়

✅ আপনার সন্তানের কোনো ব্যক্তিগত জিনিস থাকতে পারে। হতে পারে সেটা ল্যাপটপ বা ক্যালকুলেটর। অথবা হতে পারে তার তোয়ালে কিংবা গামছা। যত তুচ্ছ বিষয়ই হোক না কেন তা ব্যবহারের আগে তার অনুমতি নিন। তাহলে সেও অনুমতি না নিয়ে কারো ব্যক্তিগত জিনিসে হাত দিবে না এবং অন্যের বিষয়ে অহেতুক আগ্রহ দেখাবে না এবং অনধিকার চর্চা করবে না।
✅ আপনার শিশুর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরন করুন। সবসময় তাকে বকাঝকা করে তার সাথে দূরত্ব বাড়াবেন না। এভাবে অপ্রত্যাশিত ঘটনা এড়ানো সম্ভব। তাছাড়া বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

👉 তবে মনে রাখবেন, আপনার সোনামণির সঠিক যত্ন নিতে চাইলে, আপনি যদি মা হন তবে গর্ভাবস্থা থেকেই প্রস্তুত থাকুন। পৃথিবীকে একজন মানবিক মানুষ উপহার দিন।

ওমিক্রণ ভাইরাস কি এবং ওমিক্রণের লক্ষণ